বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড কোনগুলো? আমরা যারা নতুন ফোন কিনবো বা মোবাইল সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করি, তাদের মনে এই প্রশ্নটা আসে। যাদের মনে এই প্রশ্নটা আসে তাদের জন্য আজকের এই ব্লগটি। হ্যাঁ, আপনারা আজকে জানতে পারবেন, বাংলাদেশের সেরা দশটি ফোনের ব্র্যান্ড সম্পর্কে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড
স্যামসাং
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে
স্যামসাং। এটা বলার কারণ বাংলাদেশী গ্রাহকদের চাহিদা। বাংলাদেশি অধিকাংশ লোকের
হাতে বর্তমানে স্যামসাং ফোন দেখা যায়। শুধু বাংলাদেশে নয় বর্তমানে বিশ্বের
প্রতিটি দেশে স্যামসাং ব্র্যান্ডের ফোন পাওয়া যায়। স্যামসাং বর্তমানে
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ব্রান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই, বাংলাদেশের
সেরা দশটি মোবাইল ব্র্যান্ড নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়, তাহলে স্যামসাং এর
নাম থাকবে উপরের দিকে।
বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড স্যামসাং এর উৎপত্তি দক্ষিণ
কোরিয়ায়। ১৯৩৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় কোম্পানিটি তাদের যাত্রা শুরু করে। আজ
পর্যন্ত তারা দারুন কিছুক্ষন উপহার দিয়েছে। ২০২৫ সালে অ্যাপলের সাথে তারাও
শীর্ষ মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ড নির্বাচিত হয়েছে। বর্তমানে স্যামসাং ফোনের
বিশেষত্ব হলো প্রিমিয়াম ডিজাইন, শক্তিশালী ক্যামেরা ও তাদের বাজেট
ফ্রেন্ডলি সব মোবাইল। যার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা ব্যান্ড
স্যামসাং।
আরো পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম
অ্যাপল
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ব্র্যান্ড নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়,
তাহলে অ্যাপলকে সেই তালিকায় রাখতেই হবে। যদিও অ্যাপল খুবই এক্সপেন্সিভ, তবে
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফোনটির নাম অ্যাপল। বর্তমান বাজারে অ্যাপলের
চাহিদা খুবই বেশি। বর্তমানে ২০২৫ সালে স্যামসাংয়ের সাথে মিলে সেরা মোবাইল
ব্র্যান্ডের মর্যাদা পেয়েছে অ্যাপল। এটি এমন একটি কোম্পানি যারা বছরে একটি
মাত্র মডেলের ফোন তৈরি করে। তবুও কেন তাদের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। কারণ হলো
প্রিমিয়াম বিল্ড, শক্তিশালী ক্যামেরা ও তাদের ডিজাইন।
অ্যাপল যাত্রা শুরু করে ১৯৭৬ সালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই মোবাইল
ফোনটি বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানটি ধরে রেখেছে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে অ্যাপল কোম্পানির ফোনের জনপ্রিয়তা
আকাশচুম্বি। তাই বাংলাদেশেরও দ্বিতীয় সেরা ফোনটির নাম অ্যাপল।
শাওমি
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে
শাওমি। শাওমি এমন একটি ব্র্যান্ড যারা প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ফোন উৎপাদন
করে থাকে। তাদের ফোনগুলোর চাহিদা বাজারে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাদের ফোন
গুলোর বিশেষত্ব হলো দীর্ঘমেয়াদি ব্যাটারি, ভালো প্রসেসর ও সাশ্রয়ী দাম। যা
বাংলাদেশের মতো মধ্যমআয়ের দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়।
জনপ্রিয়তার দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা শাওমি ব্র্যান্ডের ফোনগুলো খুব
মজবুত ও টেকসই হয়ে থাকে। যার ফলে বছরে প্রচুর পরিমাণে এই ফোনটি বিক্রি হয়।
এই ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু ২০১০ সালে এবং এই ব্রান্ড টি তৈরি করেছে চীন।
বর্তমান বাংলাদেশের বাজারকে চীনা কোম্পানির ফোন গুলো শাসন করে আসছে। শাওমিও
তার ব্যতিক্রম নয়।
ভিভো
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডের মধ্যে চতুর্থ নম্বরে রয়েছে
ভিভো। বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাজারে এই স্মার্টফোনের অবদান ৯.২ শতাংশ। এশিয়া
মহাদেশে ও মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ভিভো ফোনের চাহিদা আকাশচুম্বি।
বিশেষ করে এশিয়ার বাজার দখল করে আছে ভিভো।
২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে ভিভো কোম্পানি, তারাও চীনের তৈরি। ভিভোর মোবাইল
গুলো ক্যামেরা পারফরমেন্সের জন্য বিখ্যাত। স্বল্প বাজেটে যারা ভাল ক্যামেরা
পারফরমেন্স চায়, তাদের জন্য ভিভো ফোন উপযুক্ত। ভিভো ফোনগুলোর বিশেষত্ব হলো
এটি অনেক স্টাইলিশ লুকিং এবং খুবই শক্তিশালী। বাংলাদেশের মোবাইল বাজারের একটি
বড় অংশ দখল করে আছে ভিভো।
অপো
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের তালিকায় ৫ নম্বরে রয়েছে অপো
স্মার্টফোন। বলা হয়,অপো কোম্পানি বাংলাদেশের মানুষকে ছবি তোলা শিখিয়েছে।
একটা সময় ছিল, বাংলাদেশের লোকেরা শুধু ছবি তোলার জন্য অপো মোবাইল কিনতো।
বর্তমানে এশিয়া মহাদেশের স্বল্প আয়ের দেশ গুলিতে এই ফোনের চাহিদা রয়েছে।
অপো কোম্পানির বিশেষত্ব হল ক্যামেরা, স্টাইলিশ ডিজাইন ও দীর্ঘ মেয়াদী
ব্যাটারি। মূলত এইসব কারণে বাজারে অপো ব্র্যান্ডের চাহিদা রয়েছে। উন্নত
মানের ফ্যাশন সচেতন লোকদের জন্য অপো ফোনটি বেশ ভালো। অপো ফোনের আরেকটি
বিশেষত্ব হল এটি দ্রুত চার্জ হয়। ২০২৫ সালের শেষে অপো ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৫
কোটি ৫০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অপো একটি চীনা কোম্পানির ফোন।
এই কোম্পানিটি ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
ওয়ানপ্লাস
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে ৬ নাম্বারের জায়গা দখল
করে রয়েছে ওয়ানপ্লাস। বর্তমান সময়ে ওয়ানপ্লাস খুবই প্রিমিয়াম ও বেশি
ব্যবহার্য ফোনের মধ্যে অন্যতম। এই ফোনটির বিশেষত্ব হলো উন্নত মানের প্রসেসর ও
ভালো পারফরম্যান্স। এই ফোনে কয়েক মিনিটে দ্রুত চার্জ হয় এবং দীর্ঘক্ষণ
ব্যাকআপ পাওয়া যায়। বর্তমানে এই ফোনটির ডিজাইন অনেক প্রিমিয়াম এবং ফোনটি
অনেক হালকা। তাছাড়া এই ফোনটির ক্যামেরা পারফরম্যান্স খুবই ভালো।
বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য এই ফোনটি বেশ ভালো। ওয়ানপ্লাস যাত্রা
শুরু করেন ২০১৩ সালে এবং এটিও একটি চীনা কোম্পানির ফোন। ২০২৪ সালে
ওয়ানপ্লাসের ৮০ লক্ষ ফোন বাংলাদেশের বাজারে এসেছে। ২০২৫ সালে এটি ১ কোটিতে
পৌঁছবে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। তাছাড়া বিশ্ববাজারে এ ব্র্যান্ডের অবদান
৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ এটি তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
রিয়েলমি
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে
রিয়েলমি কোম্পানির ফোন গুলো। বর্তমানে বাজেট ফ্রেন্ডলি হওয়ার কারণে এ
ফোনগুলোর জনপ্রিয়তা সবার শীর্ষে। বিশেষ করে মোবাইল গেম খেলার উপযোগী করে
তৈরি করার কারনে, তরুণদের কাছে এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। বর্তমান সময়
বাংলাদেশে যারা এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে না, তারাও স্বল্প মূল্য হওয়ার
কারণে রিয়েলমি ফোনটি ব্যবহার করছে। রিয়েলমি ফোনটি অল্প সময়ে বেশি
জনপ্রিয়তা পাওয়ার কারণ হলো এর স্বল্প মূল্য।
রিয়েলমি কোম্পানিটি তৈরি করেছে চীন এবং এই কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে ২০১৮
সালে। ২০২৪ সালে রিয়েলমির ১ কোটি ৫০ লক্ষ্য ফোন বাজারে এসেছে। ধারণা করা
হচ্ছে ২০২৫ সালে এটি ১ কোটি ৭০ লাখে পৌঁছাবে। রিয়েলমি ফোনের মত এত কম সময়ে
বেশি জনপ্রিয়তা কোন ফোন পায়নি। বর্তমানেও এই ফোনটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা
বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে।
মটোরোলা
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে অষ্টম নম্বরে রয়েছে
মটোরোলা। মটোরোলা কোম্পানি বাংলাদেশে খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও, এই
কোম্পানির ফোন গুলো বর্তমানে বেশ স্বল্প দামে পাওয়া যাচ্ছে। যারা ফোন
নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন তারা অবশ্যই জানবেন মটোরোলা অনেক পুরাতন একটি
কোম্পানি। এই কোম্পানিটি এক সময় ইউরোপের বাজার কাপিয়েছে। বর্তমানে কিছুটা
ডাউন গেলেও, মোবাইলের বৈশ্বিক বাজারের এর অবদান ৪ শতাংশ।
মটোরোলা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি এবং তারা যাত্রা শুরু করেছিল
১৯২৮ সালে। বর্তমানে এ কোম্পানি কিছু সেরা মডেলের স্মার্টফোন বের করেছে।
যার কারণে, বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্রান্ডের মধ্যে এটিকে রাখা
হয়েছে। মটোরোলা ব্যান্ডের ফোনগুলো বর্তমানে বেশ ভালো মানের প্রফেসর দিচ্ছে
এবং ফোন গুলো অনেক টেকসই। যার কারণে এর চাহিদা আবার বাড়ছে বাংলাদেশের
বাজারে।
গুগল
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে নয় নম্বরে রয়েছে
গুগলের পিক্সেল সিরিজের ফোন গুলো। বর্তমানে এ ফোনগুলো প্রচুর পরিমাণে
ব্যবহার করা হচ্ছে। যার কারণে এই ফোনগুলোর দাম দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তবে
প্রথমে যখন তারা বাজারে এসেছিল এই ফোনগুলোর দাম খুব স্বল্প ছিল। গুগলের
পিক্সেল সিরিজের ফোন গুলো ক্যামেরার দিক থেকে খুবই শক্তিশালী। যার কারণে
তাদের ডিমান্ড দিন দিন বেড়েই চলছে। তাছাড়া তারা উন্নতমানের প্রসেসর
ব্যবহার করে থাকে তাদের ফোনে।
তাছাড়া গ্রাহক যদি সত্যি কারের এন্ড্রয়েড ফোন চালানোর অভিজ্ঞতা পেতে
চায়, তাহলে অবশ্যই তার গুগল ফোনটি ব্যবহার করা উচিত। বৈশ্বিক বাজারে এই
ফোনটির অবদান ২ শতাংশ। এই ফোনটি মূলত তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং গুগল
যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালে। তারা অনেক পরে মার্কেটে আসলেও, তাদের চাহিদা
বেশ অনেক।
ওয়ালটন
বাংলাদেশের সেরা দশটি ফোনের ব্র্যান্ডের মধ্যে ১০ নম্বরে ওয়ালটনকে
দেখে আপনারা অনেকেই অবাক হতে পারেন । কারণ ওয়ালটন তো তেমন কোনো ভালো
ব্র্যান্ড না। তবে নিজের দেশের ব্রান্ড হিসেবে বর্তমানে ওয়ালটনের মোবাইল
গুলো বেশ ভালো। নিজের দেশের তৈরি প্রযুক্তির ফোন প্রত্যেকের একবার হলেও
ব্যবহার করা উচিত। বর্তমানে ওয়ালটনের মোবাইল গুলো উন্নত মানের প্রসেসর ও
বেশি রাম ও রোম দিচ্ছে। কিন্তু নিজের দেশের ব্রান্ড বলে অনেকেই ফোনের খবরই
রাখে না।
বাংলাদেশের সেরা দশটি মোবাইল ফোনের ব্রান্ডের মধ্যে ওয়ালটনকে রাখার প্রধান
উদ্দেশ্য, যারা ১০-২০ হাজার টাকা নগদ দিয়ে ফোন কিনতে পারবেন না, তারা
কিস্তিতে পেয়ে যাবেন ওয়ালটন ফোন। এবার হয়তো আপনারা বুঝতে পেরেছেন কেন ১০
নম্বরে ওয়ালটনকে রাখা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে ২০১০ সালে ওয়ালটন তাদের
যাত্রা শুরু করে এবং ওয়ালটন গ্রুপের মালিক এসএম নুরুল রিজভী। তিনি
ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান।
আরো পড়ুনঃ শারীরিক বিভিন্ন ব্যাধিতে উপকারী যেসব ফল
লেখকের মন্তব্য
উপরে যে, বাংলাদেশের সেরা দশটি ফোনের ব্র্যান্ডের তালিকা দেওয়া হল,
সেগুলো কেন ব্যবহার করবেন? এগুলো এজন্য ব্যবহার করবেন কারণ অনেক বিচার
বিশ্লেষণ ও খোঁজাখুঁজির পর এই মোবাইল ব্র্যান্ডগুলো আপনাদের সাজেস্ট করা
হয়েছে। বর্তমানে গ্রাহকরা চায় ভালো রাম, রুম, প্রসেসর, দীর্ঘ
মেয়াদী ব্যাটারি ইত্যাদি। উপরের এই দশটি ফোনে সব কয়টি ফিচার আপনারা পেয়ে
যাবেন। তাছাড়া এই ফোনগুলো খুবই জনপ্রিয়
তবে এগুলোর মধ্যে অনেক এক্সপেন্সিভ ফোনও রয়েছে। আপনারা যদি ফোন কিনেন
তাহলে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে ফোন কিনবেন। কারণ এগুলো শুধু ব্র্যান্ডের
নাম, এই ব্রান্ডের অনেক এক্সপেন্সিভ ফোনও আছে আবার অনেক লো কোয়ালিটির ফোনও
আছে। তাই সব কিছু জেনে বুঝে ফোন কিনবেন। আশা করি এই ব্লগটি পরে আপনি উপকৃত
হয়েছেন।
.webp)

.webp)
জোবায়ের ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url