পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল খুবই কমন একটি প্রশ্ন। প্রায় প্রতিটি মানুষের এই
প্রশ্নটি থাকে যে ভাই, আমি কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেটের মেদ কমাবো। তাদের জন্য
আমার আজকের এই ব্লগটি। পেটের চর্বি কমানোর ঘরোয়া কৌশল জানুন সহজ ও প্রকৃতিক
উপায়ে। নিজের শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও ভূরি সহজে কমিয়ে, নিজের কনফিডেন্স কিভাবে
তৈরি করবেন সে সম্পর্কে জানাবো আজকের ব্লগে। তাই আজকের ব্লক টি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন এবং ঘরে বসে মেদ কমানোর কৌশল সম্পর্কে জানুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল
দৈনিক রুটিন তৈরি করা
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল সম্পর্কে জানতে গেলে প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে
হবে, সেটি হলো আপনাকে দৈনিক রুটিন তৈরি করতে হবে। এক কথায়, মেদ কমানোর জন্য আপনি
প্রতিদিন যে পদ্ধতি অবলম্বন করবেন সেটার একটা তালিকা করা। প্রতিদিন সেই তালিকা
অনুযায়ী, একই সময়ে প্রতিদিনের কাজ বাস্তবায়ন করা। এভাবে আপনাকে এক থেকে দুই
সপ্তাহ কষ্ট করে নিয়ম ফলো করতে হবে। একই কাজ, একই সময়ে দুই সপ্তাহ ধরে যখন আপনি
করতে থাকবেন, তখন আপনার অভ্যাস হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আর ঝামেলা মনে হবে না। তাই
পেটের মেদ কমানোর জন্য একটি দৈনন্দিন রুটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করার জন্য আপনাকে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
কিভাবে আপনি ডায়েট প্ল্যান সাজাবেন, কখনো হাঁটতে যাবেন, কখন খাওয়া দাওয়া করবেন
এবং কি পরিমান খাওয়া দাওয়া করবেন সেগুলোর নির্দিষ্ট প্ল্যান তৈরি করতে হবে।
প্রতিদিন একই পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে এবং একই সময়ে প্রতিটি কাজ
বাস্তবায়ন করতে হবে। সময় এবং পরিমাণের কম বেশি হলে কখনোই আপনার ডায়েট প্ল্যান
কাজ করবে না। তাই দৈনন্দিন রুটিনে প্রচুর পরিমাণে মনোযোগ দিতে হবে।
সকালে গরম পানিতে লেবু ও মধু খাওয়া
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল যারা জানতে এসেছেন তাদের জন্য প্রথম উপদেশ, সকালে
গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে খান। এতে করে, আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর
হবে। লেবু ও মধু একসাথে শরীরে টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সাহায্য
করে। এতে লিভার পরিষ্কার থাকে ও শরীর সতেজ লাগে। এই অভ্যাস নিয়মিত করলে দীর্ঘদিন
সুস্থ থাকতে পারবেন। তাছাড়া পেটের মেদ ওজন কমাতে সাহায্য করে এই পানীয়। খালি
পেটে লেবু ও মধুর পানি পান করলে মেটাবলিজম বাড়ে, ফলে শরীর থেকে দ্রুত চর্বি ঝরে
যায়।
সকালে গরম পানিতে লেবু ও মধু পান করা পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশলের অন্যতম অংশ।
এটির আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সকালে গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান
করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। লেবুর অম্লত্ব হজম এনজাইম সক্রিয় করে আর মধু হজমের
সহায়তা করে। যার ফলে পেটের ভিতর খাবার সহজে হজম হয় এবং পেটের গ্যাস বা ফাঁপাভাব
সমস্যার সমাধান হয়। তাই প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে খাওয়া
মেদ কমাতে যেমন সাহায্য করে তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
দৈনন্দিন রুটিন মেনে গ্রিন টি পান করুন
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল আমরা যারা জানতে এসেছি, তারা অবশ্যই জানি গ্রিন টি
আমাদের মেদ ঝরানোর জন্য কতটা উপকারী। তাই আমরা এখন জানবো, গ্রিন টি কিভাবে শরীরের
মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরের কি কি উপকার করে। গ্রিন টি প্রথমত
শরীরের মেদ ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটেচিন ও ক্যাফেইন
শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। তাই গ্রিন টি
নিয়মিত পান করলে পেটের মেদ কমে ও শরীর ফিট থাকে। এই গ্রিন টি দ্বিতীয় যে কাজটি
করে সেটি হলো, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত গ্রীন টি পান করলে, এটি শরীরের
খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল তৈরি করে। যার ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ
থাকে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
দৈনন্দিন রুটিন মেনে গ্রিন টি পান করলে, মস্তিষ্ক সতেজ থাকে। গ্রিন টির
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়। যার ফলে মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি
ও মনোভাব উন্নত হয়। দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে, শরীরের বিষাক্ত
উপাদান দূর হয়। গ্রিন টি প্রাকৃতিক ডিটক্স লিংক যা শরীরের টক্সিন বের করে দেয়,
এতে ত্বক পরিষ্কার থাকে এবং ক্লান্তি দূর হয়। তাই আমাদের নিয়মিত গ্রিন টি পান
করা উচিত। গ্রিন টির আরেকটি উপকারিতা হলো এটি আমাদের ত্বকের ও চুলের সৌন্দর্য
বৃদ্ধি করে। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে বার্ধক্য থেকে রক্ষা করে এবং
চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। সবশেষে বলতে গেলে গ্রিন টির উপকারিতা
অপরিসীম। তাই শরীরের মেদ কমাতে আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে গ্রিন টি অত্যাবশ্যকীয়।
সকালে নিয়মিত খালি পেটে রসুন খাওয়া
রসুন একটি প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে পরিচিত, যা হাজার বছর ধরে স্বাস্থ্য উন্নত করার
কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। রসুন খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে
বেশি উপকার পাবেন তারা, যাদের প্রচুর পরিমাণে মেদ ও ভূড়ি রয়েছে। যাদের শরীরে
প্রচুর মেদ তারা যদি নিয়মিত সকাল বেলা খালি পেটে একটি রসুন খেতে পারেন তাহলে
আপনার মেদ খুব দ্রুত কমে যাবে ইনশাল্লাহ। কারণ রসুনে থাকে প্রচুর পরিমাণে
মেটাবলিজম যা শরীরের চর্বি গলাতে খুব কার্যকর। শুধু চর্বি কমাতে নয়, রসুন শরীরের
মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে।
নিয়মিত সকালে নিয়ম মেনে একটি করে রসুন খেলে আমাদের শরীর হৃদরোগ প্রতিরোধী হয়।
রসুনে থাকা আলিসিন রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল তৈরি করে।
এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং আমাদের শরীর হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকে। নিয়মিত
রসুন খেলে আরো কয়েকটি উপকার হয় সেগুলো হলো, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রসুনে থাকা সালফারের যৌগ লিভারকে সক্রিয় করে এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে
সাহায্য করে। যার ফলে আমাদের শরীর সবসময় সতেজ ও হালকা থাকে। তাই শরীরের অতিরিক্ত
মেদ কমাতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন নিয়মিত একটি করে রসুন সেবন
করা উচিত।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের আনুন
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল প্রয়োগ করার আগে আপনাকে সর্বপ্রথম আপনার
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনি যদি অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া করেন তাহলে
সেটা লিমিটের মধ্যে আনতে হবে। শরীরের মেদ কমানোর জন্য এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ধাপ। আমরা অনেকেই আছি যারা শরীরের মেদ কমাতে খুবই আগ্রহী কিন্তু হেরে যাই শুধু
খাদ্যাভাস চেঞ্জ করতে না পারার কারণে। সাধারণত যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট
জমে থাকে তারা খাওয়া-দাওয়া করতে খুব পছন্দ করে। শরীরের এই অনিয়ন্ত্রিত মেদ
কমানোর জন্য আপনাকে অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি কষ্ট করে
খাওয়া-দাওয়া নিমন্ত্রণ করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনার শরীরের মেদ কমানো
সম্ভব।
আমরা অনেকেই ভাজাপোড়া, চিনি, সফট ড্রিংকস ও ফাস্টফুড খেতে খুবই পছন্দ করি। যার
ফলে ডায়েট করা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর। খাবারের দোকানের সামনে দিয়ে হেটে গেলে
আমরা ডায়েটের কথা ভুলে যাই। মনে হয় আজকে থেকে নয়,কালকে থেকে আবার নতুন করে
শুরু করব। এটি একটি নপছো শয়তান। এই শয়তানের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য
প্রখর মনোবল প্রয়োজন। সবশেষে বলতে গেলে আপনার শরীরের মেদ কমানোর জন্য আপনাকে
আপনার খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণ করে চলতে হবে। এটার কোন বিকল্প নেই।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
আমরা সবাই ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে জানি। তবে ব্যায়ামের উপকারিতার শেষ নেই।
তাই চলুন, জেনে নেওয়া যাক ব্যায়াম করলে কিভাবে এবং কতদিনের মধ্যে আমাদের শরীরের
মেদ নিয়ন্ত্রণে আসবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। ফলে
শরীরের চর্বি দ্রুত গলে পড়ে যায়। এটি পেটের মেদ কমাতে সবথেকে বেশি কার্যকর।
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করলে পেশি টোল হয় এবং হাড় ঘন এবং শক্তিশালী হয়। এতে
অস্টিওপোরোসিস বা হার ভাঙ্গার ঝুঁকি কমে যায়। তাই শরীরের মেদ কমাতে ব্যায়ামের
উপকারিতা অপরিসীম। তাই আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।
আমরা যেহেতু পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশল রপ্ত করার জন্য ব্লকটি পড়ছি, তাই
ঘরোয়া কয়েকটি ব্যায়ামের উদাহরণ দেওয়া যাক। ঘরোয়া ব্যায়ামের কথা বলতে গেলে,
প্রথমেই যে ব্যায়ামের নাম আসবে সেটা হলো কেগেল ব্যায়াম। মেদ কমানোর সবচেয়ে
উপকারী ব্যায়াম গুলোর মধ্যে এটি জনপ্রিয়। দুই হাত মাটিতে এবং দু পা মাটিতে চিতর
হয়ে মাজা এবং বুক বার বার উপরের দিকে তোলা কেগেল ব্যায়ামের একটি অংশ। এই
ব্যায়ামটি করলে আপনার মাজার হার শক্ত হবে এবং পেটের চর্বি কমে যাবে। আপনারা
ইউটিউবে সার্চ করলে কেগেল ব্যায়ামের অনেক টিউটোরিয়াল ভিডিও পেয়ে যাবেন। তাই
ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেটের মেদ কমাতে চাইলে অবশ্যই ব্যায়াম করুন।
প্রচুর পানি পান করুন
পেটের মেদ কমানোর ঘরোয়া কৌশলের মধ্যে অন্যতম এবং সেরা একটি কৌশল হলো প্রচুর
পরিমাণে পানি পান করা। অনেকেই জানেনা, প্রচুর পানি পান করা ওজন কমানোর একটি সহজ ও
কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়। পানি শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া সক্রিয় করে।
ঠান্ডা পানি পান করলে শরীর তা গমন করতে অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ করে। যার কারনে
শরীরের চর্বি দ্রুত ঝরে যায়। খাবার খাওয়ার আগে যদি এক গ্লাস পানি পান করা যায়,
তাহলে পেট কিছুটা ভরে যায়। ফলে বেশি খাওয়া যায় না এবং এটি ক্যালোরি গ্রহণ
কমাতে সাহায্য করে।
পানি শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়। এতে লিভার ও কিডনি সক্রিয় থাকে। ফলে
চর্বি বিপাক প্রক্রিয়া সহজে সম্পন্ন হয়। পানির অভাবে শরীর ক্লান্ত ও বিভ্রান্ত
বোধ করে। তখন আমরা প্রায়ই ক্ষুধা মনে করে খাবার খেয়ে থাকি। যথেষ্ট পরিমাণ পানি
পান করলে এই ভুল ক্ষুধা কমে যাবে। ব্যায়াম করার আগে ও চলাকালে পর্যাপ্ত পানি পান
করলে শরীর হাইড্রেড থাকে। ঘামের মাধ্যমে চর্বি বলে বের হয়ে যায়। চলুন এবার জেনে
নেওয়া যাক, দিনে কতটুকু পানি পান করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক থেকে দুই
গ্লাস পানি পান করা উচিত। খাবারের ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করা উচিত এবং
ব্যায়ামের আগে ও পরে একগ্লাস করে পানি পান করা উচিত। দিনে সর্বমোট ৮ থেকে ১০
গ্লাস অর্থাৎ দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা উচিত।
সকাল বেলা নিয়মিত হাঁটা
নিয়মিত সকালবেলা হাঁটা শরীরের পক্ষে খুবই ভালো একটি বিষয়। আমরা যদি নিয়মিত
সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করি তাহলে আমাদের শরীরের কয়েকটি উপকার হয়। সবথেকে বেশি যে
উপকারটি হয় সেটি হলো শরীরের মেদ দ্রুত কমে যায়। শরীরের মেদ দ্রুত কমানোর জন্য
সকালবেলা হাঁটার থেকে ভালো উপায় আর দ্বিতীয়টি নেই। তাই আমাদের প্রতিদিন
সকালবেলা কমপক্ষে দুই থেকে তিন কিলোমিটার হাটাহাটি করা উচিত। এতে আমাদের শরীরের
ক্যালরি বার্ন হয়। হাঁটা একটি কার্ডিও ব্যায়াম। সকালে হাঁটলে শরীরের ক্যালরি
প্রচুর পরিমাণে খরচ হয়ে যায়। আর বেশি ক্যালরি ঝড়ালে শরীরে জমে থাকা চর্বি ধীরে
ধীরে কমতে শুরু করে।
সকালে হালকা বা মাঝারি গতিতে হাঁটা শরীরের মেটাবলিজম সক্রিয় রাখে। সকালের
মেটাবলিজম বেশি থাকে, তাই দিনের বাকি সময় খাবার থেকে কম চর্বি জমে। সকালে হাঁটা
রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শরীরের ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে। ইনসুলিনের
ভারসাম্য থাকলে খাবারের শর্করা দ্রুত গতিতে রুপান্তরিত হয়, যার ফলে শরীরে চর্বি
জমে না। সকালবেলা হাঁটার সময় প্রকৃতির আলো বাতাস শরীরে লাগলে মানসিক চাপ কমে
যায়। দৈনন্দিন সকালে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটা পেটের চর্বি কমাতে, মেটাবলিজম উন্নত
করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আমরা যারা শরীরের মেদ
কমাতে চাই, তাদের অবশ্যই সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করা উচিত
পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তি
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। তাই পেটের মেদ কমাতে
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের কোন বিকল্প নেই। ঘুমের অভাবে লেপটিন নামক খুদা
নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় যার ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায় আর আমরা
অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলি। তাই লেপটিন হরমোন সক্রিয় রাখার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত
পরিমাণ ঘুম প্রয়োজন। ভালো ঘুম হলে মেটাবলিজম উন্নত হয়। ভালো ঘুমের ফলে শক্তি
পুনরুদ্ধার হয়, পর্যাপ্ত বিশ্রাম শরীরকে পরের দিন ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত
রাখে। ক্লান্ত শরীর ব্যয়ের আগ্রহ হারায় যা ওজন কমানোর পথে বাধা সৃষ্টি করে বা
বড় প্রভাবক। তাই মেদ কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম খুব জরুরী।
মানসিক প্রশান্তির ভূমিকা মেদ কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ভূমিকা পালন করে।
মানসিক চাপ বা উদ্বেগ কর্টিসল হরমোন বাড়ায় যা শরীরের চর্বি জমাতে সাহায্য করে
বিশেষ করে পেটের আশেপাশের চর্বি। প্রশান্ত মন কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে রাখে। শান্ত মন
ব্যায়াম, পানি পান ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এর মতো ভালো অভ্যাস বজায় রাখতে
সাহায্য করে। তাই মেদ কমানোর জন্য মনকে প্রশান্ত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি
বিষয়।
লেখকের মন্তব্য
আমাদের বাস্তব জীবনের সবথেকে বড় সমস্যার নাম হলো মেদ বা ভুঁড়ি। আমরা অনেকেই আছি
মেদ কমানোর জন্য সার্জারি পর্যন্ত করে এসেছি। কিন্তু কোনভাবেই ফল পাওয়া যাচ্ছে
না। তাদের জন্য ঘরোয়া এই ডায়েট প্ল্যান হতে পারে সাফল্যের চাবিকাঠি। তাই যারা
ঘরে বসে অল্প সময়ে পেটের মেদ কমাতে চাচ্ছেন তারা এই ডায়েট প্ল্যানটি ফলো করতে
পারেন। মনোযোগ দিয়ে পরিশ্রম করলে এবং ধৈর্য ধরলে অবশ্যই আল্লাহ আপনাকে ফল দিবে।
তাই পরিশ্রম করুন এবং ধৈর্য ধরুন অবশ্যই আপনার মেদ কমে যাবে।
পেটের অতিরিক্ত মেদ শুধু অস্বস্তিকরই নয়, এটি অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি
করে। ঘরোয়া সহজ কৌশল গুলো যেমন সকালের হালকা হাটা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ,
পর্যাপ্ত পানি পান, মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা এবং নিয়মিত ব্যায়াম সবকিছু
মিলিয়ে পেটের চর্বি খুব তাড়াতাড়ি কমে যায়। বড় কোন ডায়েট বা ব্যায়ামের
ঝটঝাট ছাড়াই এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই দীর্ঘ মেয়াদী ফল দেয়।
জোবায়ের ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url